কৃষ্ণ নামে আমার মন কেন মজে না

রাধারমণ গীতিসমগ্র
কৃষ্ণ নামে আমার মন কেন মজে না
স্বভাব দোষ আর গেলো না ।
নিষেধ বাধা নাহি মানে প্রবল হইয়া ছয়জনা ।।
ছয় দিকে ছয়জনায় টানে নিষেধ মানে না ।
আমায় অকূলে ডুবাইয়ে মারলো কূলকিনারা পাইলাম না ।।
হরেকৃষ্ণ হরেকৃষ্ণ কর উপাসনা ।
হরেকৃষ্ণ নাম লইলে ভব যন্ত্রণা রবে না ।।
ভাইবে রাধারমণ বলে শুন রে আমার মনা
গুরুর পদে না হইলো রতি রইলাম কেন, মরলাম না ।।
রাধারমণ গীতিসমগ্র

নূর মোহাম্মদ ছাল্লিয়ালা

দুর্বিন গীতিসমগ্র
নূর মোহাম্মদ ছাল্লিয়ালা
ইসলাম পতি, উম্মতের সারথী
দুজাহান তরানেওয়ালা ।।
আউয়ালে আহাদ, দুওমে আহাম্মদ
ছিওমে মোহাম্মদ, চাঁদের উজালা ।
চাহারমে রাসুল, দুজাহানের মকবুল
রঙিন গোলাপফুল, পুষ্পমালা ।।
আবুবকর উসমান, আনিলেন ঈমান
আবু জেহেল প্রমান নাহি মানিলা ।
প্রিয় মুসলিম ওলিগণ, দ্বীনে আসে জনে জন
ভ্রমরা যেমন ফুলে উতালা ।।
শুনেছি কোরাণে, আপনার কর্ণে
ওয়াতি রাসুল ওয়াতি উল্লা ।
সে চরণের আশা, মনে রাখি ভরসা
পাগল দুর্বিন শা রাহে লিল্লা ।।
দুর্বিন গীতিসমগ্র

দোল দোলা দোল পুতুল খোকা

মনোমোহন গীতিসমগ্র
দোল দোলা দোল পুতুল খোকা ।
মায়ামঞ্চে দোল খাইয়ে, কি সুখ পেয়ে আছিস বোকা ।।
কামনার দুই কাছি দিয়ে, আশাবৃক্ষে দোল টাঙ্গাইয়ে
দোল দিতেছে একটি মেয়ে, দেখলাম চেয়ে ভঙ্গি বাঁকা ।
মেয়ে নয় সে মায়া পাখি, ফাঁকি দেয় তার ছদ্ম আঁখি
পুতুল খেলায় মত্ত সখি, দুই ধারে দুই আছে পাখা ।
নিমিষে ব্রহ্মাণ্ড ঘুরে, দোল খেলায় আর হেসে মরে
ফাদ পেতে চাঁদ রাখে ধরে, ভেল্কি করে দেয় ধোকা ।
তার দোলেতে সবাই বসে, কেউ বা কাঁদে, কেউ বা হাসে
অমনি মেয়ে সর্বনেশে দশকুশিতে দেয় টোকা ।
সে তালে উঠিয়া ফাল, ঠিক থাকেনা কালাকাল
লুটে নেয় সব মালামাল, যার কপালে যা লেখা ।
দোলনি খেয়ে মাথা ঘুরে, মনোমোহন গেছে পড়ে
বন্ধু জনায় চায়না ফিরে, কান্দছে বসে সে একা ।।
মনোমোহন গীতিসমগ্র

এগো রহিম জান গো তো লাগিয়া হাছন রাজা পাগল গো

হাছন গীতিসমগ্র
এগো রহিম জান গো তো লাগিয়া হাছন রাজা পাগল গো ।
রহম করিয়া আইসো একবার কোলে লই গো ।
সুন্দর সুন্দর তুমি সংসার জিনিয়া, সংসার জিনিয়া ।
হাছন রাজা পাগল হইছে তোমার চান্দমুখ দেখিয়া ।।
চান্দের লাখান মুখখান তোমার ঝলমল ঝলমল করে ।
আরে যে দেখিলো একবার সে কি আর পাশরে ।।
আচানক রুপ তোমার দেখতে চমৎকার ।
আরে বর্ণনা যে করে রুপের শক্তি আছে কার ।।
তোমার রুপের কথা কহন না যায় ।
তুলনা যে দিবো কীসে মুখে না জোওয়ায় ।।
হাছন রাজায় দেখছে তোমায় দু নয়ন ভরিয়া ।
সেই কথা মনে হইয়া নাচে হাতে তালি দিয়া ।
হাছন রজায় দেখিয়া বলে তোমার নূরী অঙ্গ ।
কোরবান হইয়াছি আজি তোমার রাঙ্গ ঠেঙ্গ ।।
হাছন গীতিসমগ্র

আর আমারে মারিসনে মা

লালন গীতিসমগ্র
আর আমারে মারিসনে মা ।
বলি মা তোর চরণ ধরে ননী চুরি আর করবোনা ।।
ননীর জন্যে আজ আমারে মারলি গো মা বেধে ধরে ।
দয়া নাই মা তোর অন্তরে স্বল্পেতে গেলো জানা ।।
পরে মারে পরের ছেলে কেঁদে যেয়ে মাকে বলে ।
মা জননী নিঠুর হলে কে বোঝে শিশুর বেদনা ।।
ছেড়ে দে মা হাতের বাঁধন যায় যেদিক এই দু নয়ন মন ।
পরের ডাকে ডাকবে এখন লালন তোর গৃহে আর থাকবে না ।।
লালন গীতিসমগ্র

ভাব বিনে কি ভাবের মানুষ ধরতে পারা যায়

জালাল গীতিসমগ্র
ভাব বিনে কি ভাবের মানুষ ধরতে পারা যায়
অচেনা এক ভাবের পাখি, হৃদাকাশে উড়ছে সদায় ।।
প্রেমময়ের প্রেমমুখ, দেখবার আশে কতই দুঃখ
স্থুল জগতে হইলো সুক্ষ্ম, তাই সে চিনা বিষম দায় ।।
ভাবেতে ব্রহ্মাণ্ড ঘুরে, বিশ্বব্যাপী একটি তারে
প্রাণের কথা ধীরে ধীরে, কানের কাছে কয়ে যায় ।।
কাননে ঐ কুসুম কলি, ঝরে ফোটে আসে অলি
রক্তজবা জুই চামেলী, আপনা রঙ্গ আপনি চায়
গিরি গুহায় বর্তমান, আছে কত ভাবের পাষাণ
এক জনেরই অনুসন্ধান, করতেছে লতায় পাতায় ।।
কেন জন্ম মৃত্যূ হয়, কয়জনে তার খবর লয়
গ্রহ তারা গগনময়, মিটি মিটি কেন চায়
ভাবের সাগর গভীর ভারি, সকলের ঘটেনা পাড়ি
প্রেমিকের ভাঙা তরী, বিন বাতাসে উজান ধায় ।।
ভাব নদীতে জীবনধারা, চলছে ভাটি, রয়না খাড়া
তেমনি করে যায় যে মারা, বাহ্য লীলা ভুল কোথায়
জালাল কয় মোর ভাবের গোলা, গুরু বিনে যায়না খোলা
দুই চক্ষে পড়েছে ধুলা, মন মজেনা চরণ সেবায় ।।
জালাল গীতিসমগ্র

মুর্শীদ ধর তন বিচার, মওলার নাম লইয়া কাম কর সার

কালাশা গীতিসমগ্র
মুর্শীদ ধর তন বিচার, মওলার নাম লইয়া কাম কর সার ।
ওরে মুর্শীদ বিনে এই সংসারে কে আছে আপন তোমার ।।
এ দুনিয়া হবে ফানা, বুঝলি না তুই মনরে কানা ।
ঘরের জরু, বিষের লাড়ু ওরে তুমি করছো সার ।।
সঙ্গের সঙ্গী কেহ নাই, কি বুঝ পাইয়াছো ভাই ।
আসবে শমন, বাঁধবে যখন, দোহাই তখন দিবে কার ।।
ধরিয়া মুর্শীদের হাতে, কবর হাশর পুলছেরাতে ।
ছকরাত সময়ের কালে মুর্শীদ করিবেন পার ।।
অধম কালাশায় বলে, জান শরীফ শার চরণ তলে ।
মুর্শীদ ইমাম ঠিক হইলে কিসের মুশকিল হবে তার ।।
কালাশা গীতিসমগ্র

কৃষ্ণ নাম ব্রহ্ম সনাতন দিবা নিশি কর রে ভাবন

রাধারমণ গীতিসমগ্র
কৃষ্ণ নাম ব্রহ্ম সনাতন দিবা নিশি কর রে ভাবন ।
এক অক্ষরী নামের তরী দুই অক্ষরী জিনিষ ভরি
নামের নৌকা করবে সাজন ডাকাইতেরই ভয় আছেরে মন
লুইটে নিবো সবই ধন
নিতাই চান্দের হাটে যাইয়ে প্রেমধন বোঝাই করিয়ে
মালের কোঠায় চাপি দেও রে মন
সাবধানে চালাইও তরী মারা না যাইবায় কখন ।
রমণ গোসাইর ঐ বাসনা শ্যাম জ্বালায় প্রাণ বাঁচেনা
প্রেমজ্বালায় জ্বলিয়াছে অন্তর
হরি বলে ব্রজে চল যাইবায় বৃন্দাবন ।
রাধারমণ গীতিসমগ্র

কে যাও রে মদীনার পথে, ওহে মুসাফির

দুর্বিন গীতিসমগ্র
কে যাও রে মদীনার পথে, ওহে মুসাফির ।
আমার সালাম কইও, দরবারে নবীর ।।
নূরে নূরীতন, নবী আলী মা ফাতেমা
হাসান আর হোসন, ওরা পাক পাঞ্জাতন ।
রাখি আশা পদতলে, হইতে মোহাজির ।।
ওই নাম অজিফা হরদম, মোহাম্মদ মোস্তফা নবী
ছারওয়ারে আলম, যিনি হাবীবে আজম ।
হায় আল্লাহ দেখাও আমারে, নূরানী তাসবীর ।।
রাহি যাইতে মদীনা, রওজা মোবারক আমারে
দেখাও রব্বানা, চোখের পরদা রেখোনা ।
দুর্বিন শা পাগল দেওয়ানা, ওই নামের ফকীর ।।
দুর্বিন গীতিসমগ্র

ফাক তালে দুনিয়া ঘুরে সমের ঘরে বেদম ফাঁকি

মনোমোহন গীতিসমগ্র
ফাক তালে দুনিয়া ঘুরে সমের ঘরে বেদম ফাঁকি ।
ঠিক দিয়া দেখ জমা খরচ, উসুল নাই তোর কেবল বাকী ।।
যখন ভবে পয়দা হলে, তখন হতে খরচ গেলে
হিসাব করে দেখনা মূলে, হারে রে পিঞ্জরের পাখি ।
পুতুল খেলায় পুতুল সাজি, যাদের লাগি এ কারসাজি
বম ভোলানাথ দিয়া তারা, রসি বেধে মারছে ঝুকি ।
বুঝিয়া না বুঝিস কানা, আখেরে দুনিয়া ফানা
সার হলো তোর ধান ভানা, হারে মানুষ কলের ঢেকি ।
ভাব বুঝিয়ে মনোমোহন, পলায়ে রাখে জীবন,
ঘুমের ঘোরে দেখে স্বপন, কাল শমনে মারছে উকি ।
পলাইতে পথ আছে, দিন থাকিতে লওনা খুজে
পান্থশালার মন্থের কাছে, জানতে পারলে হয় লুকি ।।
মনোমোহন গীতিসমগ্র